ইন্টারন্যাশনাল উইমেন

ক্ষুদে বই পড়ুয়া,একদিনে যার পড়া হয় ৪৬৪পৃষ্ঠা!

ক্ষুদে বই পড়ুয়া,একদিনে যার পড়া হয় ৪৬৪পৃষ্ঠা!
JS54035063 ১০বছর বয়সী মেয়ে ফেইথ জ্যাকসন বই পড়তে ভালোবাসে। কিন্তু কতটা?! ২০১৪সালে ফেইথ এর পড়া বইয়ের সংখ্যা সর্বমোট ৯৪২টা! এবং গড়ে প্রতিদিন আর পড়া বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা প্রায় ৪৬৪ পৃষ্ঠার মতো! যা সত্যিই কৃতিত্বপূর্ণ কাজ! যেখানে মানুষ ছোট থেকে বড় হতে হতে পড়ুয়া বইয়ের সংখ্যা হয়তো হয় এতোটা,সেখানে মাত্র এক বছরেই ফেইথ পড়ে শেষ করেছে এমন অস্বাভাবিক সংখ্যার বই!অবাককর ব্যাপার ই বটে! মজার ব্যাপার হলো,এতো এতো বই পড়ার পর এই ক্ষুদে বইয়ের পোকা এখন আর একলা একলা পড়তে পছন্দ করে না। আর তাই সে এখন বই পড়ে তার মতোই আরো কিছু বই পোকার সাথে। ফেইথের এমন পড়ুয়া অভ্যাস কিন্তু একদিনে হয় নি। ফেইথের মা মিসেস জ্যাকসন এর ভাষ্যমতে, ' ফেইথ যখন স্কুলে যাওয়া শুরু করে,তখন সে রিডিং পড়তে খুব ইতস্তত বোধ করতো,এবং সহজে সে পড়তে চাইতো না।' ফেইথ এর এই সমস্যা দূর করার জন্য মিঃ এবং মিসেস জ্যাকসন মিলে ঘর ভর্তি স্কুলের বই এর বদলে যখন যে ধরনের বই পড়তে ফেইথ পছন্দ করে সেই সেই বই গুলো আনতে শুরু করলেন। আর সব সময় খেয়াল রাখতেন,যে কোন মূল্যে যেনো ফেইথ বই পড়তে বিরক্ত না হয়। যদি স্কুলের বই ভালো না লাগে তাহলে গল্পের বই পড়বে,গল্পের বই ভালো না লাগলে ফিকশন পড়বে,না হলে কমিকস পড়বে,ম্যাগাজিন পড়বে এই চিন্তা মাথায় রেখে তারা  নানান রকমের বই দিয়ে তারা ফেইথের জন্য লাইব্রেরি সাজিয়েছেন। আর এই লাইব্রেরি ই তৈরী করেছে আজকের এই 'বই পড়ুয়া ফেইথ' কে। ফেইথ যখন ধীরে ধীরে বই পড়ায় অভ্যস্থ হয়ে গেলো,তখন থেকে সে বাছাই করতে শুরু করলো কি কি ধরনের এবং কার কার লেখা বই তার ভালো লাগে। ফেইথের বাবা-মা,তার সেই লিস্ট দেখে আর জন্য দুর্লভ থেকে শুরু করে সর্বশেষ পর্যন্ত সব রকমের কালেকশন লাইব্রেরীতে এনে রাখতেন এবং বিভিন্ন অকেশনে সুযোগ বুঝে মেয়েকে তার প্রিয় প্রিয় লেখকদের সাথে সাক্ষাৎ করাতে নিয়ে যেতেন,যাতে করে আরো বেশি বেশি বই পড়তে এবং  নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তৈরী করতে ফেইথ সাহায্য ও উৎসাহ পায়। ফেইথের বই পড়ার প্রতি আগ্রহ এবং এই ছোট্ট বয়সেই জ্ঞানের পারদর্শীতায় মুগ্ধ হয়ে ফেইথ এর প্রিয় রাইটার হলি ওয়েব তার একটা বই উৎসর্গ করেন ফেইথ কে। বইটির নাম হচ্ছে, 'দ্যা ফরগটেন পাপ্পি'। প্রিয় লেখকের কাছ থেকে এমন অনাকাংখিত আর অসাধারন উপহার পেয়ে ফেইথ অসম্ভব খুশী হয়। বই পড়ার সংখ্যা যতো বাড়ছে দিনে দিনে ফেইথ ততোই কনফিউসড হচ্ছে,আসলে তার প্রিয় লেখক কে!! এবং সে এখন এই প্রশ্নের জবাব দিতে খুবই হিমশিম খায়! সেই সাথে আজকাল তো ফেইথ বিছানায় যেয়ে ঘুমাতেও ভুলে যায়,দেখা যায় বই পড়তে পড়তে সে চেয়ারেই বা বইয়ের স্তুপে ঘুমিয়ে গেছে! বই মানুষের জীবন কে আলোকিত করে,মানুষকে আর জন্য সঠিক পথ খুঁজতে এবং সে পথে চলতে সাহায্য করে। এ কথাটার একটা উজ্জ্বল প্রমাণ হচ্ছে আজকের ছোট্ট মেয়ে ফেইথ জ্যাকসন। যে মেয়েটি ছোট্ট বেলায় রিডিং পড়তে চাইতো না আর আজ সে এক দিনেই ৫০০ এর কাছাকাছি বই পড়ছে এবং সে আফসোস করে যে সে এখনো ১০০০ পৃষ্ঠা করে একদিনে বই পড়তে শিখেনি তাই!! ফেইথের বাবা-মা মেয়েকে বই পড়তে শিখিয়েছেন আর এই অভ্যাস ফেইথ কে শিখিয়েছে জীবনে  অনেক অনেক বড় হবার ইচ্ছে থাকতে হবে আর থাকতে হবে উপযুক্ত পরিকল্পনা। আর তাই ফেইথ যতই পড়ুক না কেন,জীবনে বড় হবার জন্য যা যা গুণ অর্জন করা দরকার তা অর্জনের জন্য চেষ্টা করতে সে ভুলে না। যার ফলাফল স্বরুপ,ক্লাসে ভালো রেজাল্টের পাশাপাশি সাঁতারে,কারাতে এবং ম্যাথমেটিকস চর্চাত ফেইথ এর অবস্থান প্রথম সারিতে। সেই সাথে ফেইথ খুব পছন্দ করে পরিবারের সাথে সময় কাটাতে। বিশেষ করে ছোট ভাই-বোন এলসা,জেমস,কর্ম্যাক এর সাথে গল্প করতে,তাদের কে বই পড়ে শুনাতে খুব ভালোবাসে। এতো এতো বই পড়ুয়া মেয়েটি একদিন নিশ্চয়ই ভালো লেখক হবে,এমন চিন্তা অন্যরা করলেই এখন পর্যন্ত ফেইথ কেবল পড়তেই ভালোবাসে! কিন্তু বড়দের প্রত্যাশা আর উৎসাহ-সহযোগিতা থাকলে মনে হয় না খুব বেশিদিন সময় লাগবে এই ক্ষুদে পড়ুয়ার মেধা সারা বিশ্বকে নত্নুন প্রতিভাবান লেখক-বিজ্ঞানী আর সমাজ নির্মানের কারিগর উপহার দিতে। সূত্র- ম্যানচেষ্টার ইভেনিং নিউজ।      

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)