মেইক ইউরসেল্ফ (রুপচর্চা,পারসোনালিটি,ক্যারিয়ার,স্বাস্থ্য)

প্রচেষ্টা

প্রচেষ্টা
thumbরাফিয়া হোসেন আন্নি বর্তমানে সম্মান তৃতীয় বর্ষে অধ্যয়ন করছে। ঢাকায় বাবা-মার সাথে থাকে। এক ভাই ও দুই বোনের আদরের ছোট বোন। সব সময় চায় একটা ভালো মেয়ের মত হয়ে থাকতে। ছোট-বড় পাপ যেগুলা করে, সব ছেড়ে দিতে। ছেড়েও দেয়। কিন্তু ছেড়ে দিলেই শয়তান কানপড়া দিতে থাকে। আমরা ধারাবাহিক ভাবে আন্নির আর শয়তানের কিছু যুদ্ধ দেখবো- -আন্নিপু, তুমি না আমার নতুন খেলনাটা দেখবা? আন্নি টেবিলে পানির গ্লাস রাখতে রাখতে বলে, হুম্ম দেখবো তো। নতুন বন্দুকটা না? ওয়াও! এইটাতো স্মার্ট বন্দুক। দেখি দাও তো। উহু; ওখান থেকেই দাও। ক্যাচ ধরতেছি। সাকিব বন্দুকটা আন্নির দিকে ছুড়ে দিয়ে সাবিহার দিকে তাকিয়ে বলল, বড়পি আমি বলছিলাম না, আন্নিপু প্রত্যেক ঈদে আমার সাথে খেলতেই আসে। দেখলা এখন? সাবিহা বলল, হুহ। বলছে তোরে। শোন, এখানে আমার সব বান্ধুবিরা আসছে ঈদে আমার সাথে দ্যাখা করতে। আর তর আন্নি আপু আসছে আম্মুর বানানো চটপটি খাইতে। বুঝলি? দ্যাখছ না ক্যামন অপ কইরা আছে, মাইপা মাইপা কথা কয়। আন্নি বিরক্ত হয়ে বলল, আন্দাজে কথা কইছ না দোস্ত। শুধু শুধু কিউট ভাইটারে চেতাইতেছিস। নিজেরা বইসা বইসা গীবত করতেছিস। আবার মাইনসেরে কথা শুনাইতে আসছ। সারাদিন পাপ করতে করতে তরা সব নষ্ট গেছস। ফালতু যত্তসব। তরা কোন দিন যদি একটু ভালো কথা বলতি! সারাদিন ফালতু প্যাচাল। ক্যামনে পারিস? প্রিয় পাঠক, আন্নি এরকম রেগে গেল কেন জানেন? শয়তানের প্ররোচনায়। আন্নি ভাবছিলো- এটাতো বন্ধুত্বের ধমক। কিন্তু না আর কে কি করলো সেটা বড় কথা না। বন্ধুদের সাথে দুষ্টামি করাই যায়; কিন্তু ব্যবহারটা ভালো হতেই হবে। একটা সুন্দর মজার মুহূর্ত আন্নির কিছু কথায় কিছুক্ষনের জন্য নষ্ট করে দিল। আন্নি কিন্তু আসলেই এতক্ষন গীবত করবে না ভেবে চুপ ছিল। দুর্বল ইমানদারের মত, না পারছিল কিছু বলতে- না সইতে। ও একবারও সুন্দর করে কাউকে বুঝানোর চেষ্টাও করেনি। কারণ, আন্নির ধারনা ছিল কেউ ওর কথা শুনবেনা। শেষে যখন বললো তখনো সুন্দর করে বললো না। এভাবে বললে কি আর কেউ বুঝার চেষ্টা করবে? রাগই হবে সবার। তাই না? যাই হোক, সবাই একটু আগের চিল্লা-পাল্লা ভুলে গল্পে মশগুল। এখনকার আলোচনার বিষয় হচ্ছে, রাহা মেয়েটা কি পরিমান বিরক্তিকর সেটা। সবাই এক গল্প করছে, কিন্তু এক কোণে আন্নি আর সাকিব মিলে গবেষণা করছে বন্দুকটা নিয়ে। ঠিক এ সময় শয়তান পাশ থেকে ফিসফিসিয়ে বললো, আন্নি! তুমি এখনো চুপ! আরে বলোনা সেদিন রাহা কি বলতেছিল পাশের মেয়েটাকে। ওইটা তো সামান্য একটা ব্যাপার। বলোই না! কিচ্ছু হবে না। এটা কি তেমন খারাপ কিছু নাকি বলে ফেল। আরে! সবার জানা দরকার এটা। এবার আন্নি বলে উঠলো, আসলেই রাহা মেয়েটা না! সেদিন কি হইছে শোন... gibah আন্নির সাথে আগেও অনেক এরকম হয়েছে, শয়তান কান পড়া দিতে দিতে অবশেষে জিতে গিয়েছে। কেন জিতেছে জানেন? কারণ, আন্নি অনেকের মধ্যে একা আলাদা থেকে ভালো হতে চেয়েছে। অথচ আল্লাহ কিন্তু আমাদেরকে শুধু ভালো কাজ করেই থেমে যেতে বলেন নি। ভালো কাজের জন্য আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ করতে বলেছেন। আন্নি সেইদিন বাসায় ফিরে সব সময়ের মতই অনুতপ্ত হয়েছিল। কিন্তু ও আরেকটা কাজ করেছিল যা না বললেই নয়, ও ভালো মত গীবত নিয়ে পড়েছিল এবং জেনেছিল। আন্নি জেনেছিল গীবতের ভয়াবহতা সম্পর্কে।আন্নি বুঝেছিল- “কারো অনুপস্থিতিতে তার সম্পর্কে এমন কথা বলাই গীবত যা সে পছন্দ করে না।” অথচ আন্নি আগে পছন্দ করে কি করে না সেটা ভাবতোই না। ভাবতো, এটা তো তার দোষ না, আমি বলতেই পারি। আর তারপর- আন্নি ঈদের দিনে যাদের সাথে একটু খারাপ ব্যবহার করেছিলো তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছিল এবং তাদেরকে গীবতের ভয়াবহতা বুঝিয়েছিল। তাদের সবার কাছে সাহায্য চেয়েছিল গীবত থেকে বেচে থাকার জন্য। সব মানুষই একটু ভালো হয়েই থাকতে চায়। তাই ওরাও গীবত বন্ধ করার জন্য কিছু পদক্ষেপ নিল। এরপর থেকে আন্নিরা কি করতো জানেন? ব্যাগে সব সময় কিছু চকলেট রাখতো। ভাবছেন এর সাথে গীবতের সম্পর্ক কি?  তাহলে আরেকদিনের কাহিনী বলেই ফেলি, কাজলি নামের মেয়েটির সামান্য একটি কথায় আন্নি খুব কষ্ট পেয়েছে। আর তাই আজ আড্ডার বিষয় বস্তু হচ্ছে কাজলি। সাবিহা দূর থেকে শুনছে কাজলির চরিত্রের পোস্টমর্টেম হচ্ছে। সাবিহা তাই ওদের কাছে যেয়ে শুনিয়ে দিল নিজেদের প্যারোডি কবিতার দুই লাইনঃ                         কথার রাজ্যে পৃথিবী গীবতময়-                     মরা ভাইয়ের গোশত যেন সুস্বাদু খাবার।   আর সাথে সাথেই আন্নিরা পাঁচজন পাঁচটা চকলেট ধরিয়ে দিল সাবিহার হাতে। এটা হচ্ছে সাবিহার পুরষ্কার। আর অন্যদের জন্য অর্থাৎ গিবতকারীদের শাস্তি। মজা না?  আচ্ছা! আন্নিদের জন্য আপনাদের কোন পরামর্শ আছে? থাকলে বইলেন। আমি আন্নিদের জানিয়ে দিবো।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)