ধর্ম ও গবেষনা

আল কুরআনঃ সুখ অনুভূতির খোরাক জোগায় (২য় পর্ব)

আল কুরআনঃ সুখ অনুভূতির খোরাক জোগায় (২য় পর্ব)
নাস্তিকদের জন্য শিক্ষাঃ আল্লাহর অস্তিত্বকে যারা অস্বীকার করে তাদেরকে নাস্তিক বলা হয়। নাস্তিক লোকেরা সৃষ্টি কর্তাকে বিশ্বাস করেনা। তারা ভাবে সৃষ্টি কর্তা বলতে কিছু নেই। এই পৃথিবী আপনা আপনি সৃষ্টি হয়েছে এবং আপনাতেই ধ্বংস হয়ে যাবে। এ ধরণের লোকরা সত্যিই অজ্ঞ। তারা বলে সৃষ্টিকর্তা যদি থাকতো তবে মানুষের বিশ্বাস অর্জণের জন্য দেখা দিত। তাদের কথার প্রক্ষিত কথা হলো বিশ্বাস অবিশ্বাসের কথা তো সে জন্যই বলা হয়েছে তাইনা? যা দেখা যায় তার ব্যাপারে বিশ্বাসের কিছু নেই, কিন্তু যা দেখা যায়না তার ব্যাপারেই বিশ্বাস করতে হয়। নাস্তিক্যবাদীদের মধ্যে ডারউইন নামে একজন নাস্তিকের মতবাদটি গভীর প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়েছে। ডারউইনের মতে এই পৃথিবী আপনা আপনিই সৃষ্টি হয়েছে এবং আপনাতেই ধ্বংস হয়ে যাবে, তার ধারণা প্রতিটি জীব  জড় পদার্থের সংমিশ্রণে তৈরী হয়েছে। আর যে জীব যে পদার্থ অর্থাৎ জড় পদার্থ থেকে সৃষ্টি হয়েছে সে জীব নির্দিষ্ট মেয়াদ পরে আবার সেই পদার্থেই পরিণত হবে। ডারউইন ও তাঁর মতবাদে বিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে , আপনা আপনি তৈরী হওয়ায় অবশ্যই তারা জানে যে তারা কী পদার্থ থেকে তৈরী হয়েছে? আর কিভাবে সৃষ্টি হয়েছে? কিন্তু ওরা এ ব্যাপারে কিছুই বলতে পারবেনা।  আসলে এদের সবকিছুই একধরণের হালকা পিছলামীর উপরে প্রতিষ্ঠিত, যা তাদের চোখের মণিতে ছানি ফেলে রেখেছে। না তারা সত্য দেখতে পায় না দেখাতে পারে। ওরা সত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আর তাই আল্লাহ রব্বুল আলামীন ওদের অন্তে মোহর মেরে দিয়েছেন। ফলে তারা না দেখতে পায় না শুনতে পায়। গোড়ামীর চরম পর্যায়ে পৌঁছে নিজেদেরকে মূলত মূর্খতার মধ্যে ফেলে রাখে। "যারা নিজেদের অদৃশ্য আল্লাহকে ভয় করে, নিশ্চয়ই তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও অতিবড় সুফল" (মূলক-১২) আল্লাহ রব্বুল আলামীনকে শুধু বিশ্বাসই নয় তাঁকে ভয় করতে হবে। তারা আরো বলে জ্বীন বলে কিছু নেই। অথচ আল্লাহ নিজে বলেছেনঃ আমি জ্বীন ও মানুষকে সৃষ্টি করেছি আমার ইবাদাতের জন্য। এই কুরআনকে ভালোভাবে বুঝলে নাস্তিকরা এ ধরণের চিন্তা করতে পারতোনা। এ ধরণের অবিশ্বাসীদের জন্য আগুণ দাউদাউ করে জ্বলছে। যে আগুণের তাপমাত্রা দুনিয়ার আগুণের চেয়ে সত্তর গুণ বেশী তাপের। কতো ভয়ংঙ্কর শাস্তির প্রস্তুতি! কুরআন নারী অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছেঃ পুরুষ বা স্ত্রী যে লোক নেক আমল করবে, ঈমানদার হয়ে সে বেহেশতে দাখিল হতে পারবে, এ ব্যাপারে কারো প্রতি যুলুম করা হবেনা।" (নিসা-১২৪) স্ত্রীদেরও তেমন অধিকার যেমন স্বামীদের রয়েছে তাদের উপর এবং তা যথাযথ ভাবে আদায় করতে হবে। (সুরা বাকারা-২২৮) উপরোক্ত আয়াতদ্বয় নারী পুরুষের সমান অধিকারের কথা বলে। কিন্তু কিছু মানুষ দুটি প্রশ্ণ করে থাকে- ১. স্বামীর মর্যাদা বেশী কেন? ২.ছেলের চেয়ে মেয়েরা কম সম্পদ পায় কেন? একচোখা দুটি প্রশ্নের উত্তর হলোঃ ১.মেয়েরা বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে ছেলেদের চেয়ে অর্ধেক পায় ঠিক আছে, কিন্তু একজন নারী বিয়ের পর তার স্বামীর কাছে থেকেও সম্পদের অংশ পায়। কিন্তু পুরুষদের জন্য স্ত্রীর কাছে কাছে সম্পদের কোনরূপ পাওনা থাকেনা। ২.একদম সঠিক কথা যে স্বামীর মর্যাদা কিছুটা হলেও স্ত্রীর চেয়ে বেশী, তবে লক্ষ্য রাখা দরকার শুধুই মর্যাদার দিক থেকে, অধিকারের দিক থেকে নয়। এই মর্যাদার দিক থেকেই একজন মায়ের মর্যাদা একজন বাবার চেয়ে তিন গুণ বেশী। ভেবে দেখা খুবই জরুরী যে মহান স্বত্তার, সূহ্ম বিচারকের ভূল ধরার ধৃষ্টতা প্রদর্শণের সাহস মানুষ পায় কি করে?  জাহেলী যুগে যখন নারীকে পণ্য হিসেবে ব্যাবহার করা হতো সে সময়ের চেয়ে নারীর মর্যাদা আজ কতো উচ্চে? এবং তা ইসলাম দিয়েছে। জাহেলী যুগে কণ্যা সন্তানে জীবন্ত পুঁতে ফেলা হতো, হ... করা হতো। কেননা বড়ো হেই তাঁরা সমাজে লাঞ্চিত ও অপমানিত হতো। অথচ রাসুল (সঃ) এই কুরআনের মাধ্যমে সেই জাহেলিয়াতের অবসান ঘটিয়েছে। তিনি বলেছেনঃ "যে কণ্যার পিতাকে গালি দিলো সে যেন আমাকেই গালি দিলো"। তিনি আরও বলেছেনঃ "যার তিনটি কন্যা সন্তান তার জন্য তিনটি বেহেশত। " সাহাবীগণ বলেছিলেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ যার দুটি? তিনি বলেছিলেন, তার দুটি জান্নাত। তিনি আরো বলেছেন, যে ব্যাক্তির কন্যা সন্তান আছে এবং সে তার সন্তানকে দ্বীনি শিক্ষা দিলো, এবং সৎ পাত্রস্থ করলো তাহে আমি আর সে হাশরের ময়দানে একথা বলে তিনি শাহাদাত আঙ্গুল ও মধ্যমা আঙ্গুল একত্রিত করে বলেছিলেন এভাবে থাকবো। আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাঁর সমগ্র সৃষ্টির মধ্যে মানুষকে সৃষ্টির সেরা হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন, আর এই মর্যাদার মধ্যে নারী পুরুষ উভয়েই পড়ে। আর সে মর্যদার যথাযথ মূল্যায়ণ করা কিন্তু মানুষেরই দায়িত্ব। স্রষ্টার ভালোবাসা, নেয়ামত, মর্যাদা পেয়ে তাঁর নাফরমানী করা মারাত্মক ভুল। এই ভূল করা ঠিক না।

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)