অনির্ধারিত

প্রতীক্ষা

প্রতীক্ষা

ইদানীং এই চারপাশ কেমন অচেনা লাগতে থাকে
এখন আর কিছু-ই আকৃষ্ট করেনা আমাকে!
সকালে শিশিরের টুপটাপ শব্দ, টিনের চালে বৃষ্টির ঝনঝনানি, প্রাকৃতিক কোন অসাধারণ দৃশ্য, গোধূলীর মায়াময় আভা কিংবা সন্ধ্যারাতের রিক্সার টুংটাং আওয়াজ, যা আমাকে কাব্যিক করেছে কত কাল।
বই পড়ে কত রাত নির্ঘুম কেটেছে!
এখন দু'পাতা না পড়তে চোখজোড়া বুজে আসে ক্লান্তিতে।
বন্ধুদের সাথে প্রতিদিন কথা বলা, মজা না করলে যার ভালো লাগতো না,
সপ্তাহ গড়িয়ে এখন মাস চলে যায় কোন যোগাযোগ ছাড়া!
কি লাভ এই সোশ্যাল মিডিয়ার বাক্য বিনিময়ে?
কেমন আছিস? এর উত্তরে শত কষ্টে থেকেও 'ভালো আছি' শুনতে কারই বা ইচ্ছে করবে?!
এই সব কিছু এখন কেমন অযাচিত লাগতে থাকে।

পারিবারিক বন্ধন, বন্ধুত্ব এসব কিছু ছেড়েই একদিন যেতে হবে আমার মালিকের কাছে
তবে এই মিছে মায়া বাড়িয়ে কী লাভ?

সব কিছুই বদলে যায়
বদলে যায় সময়, বদলে যায় জীবন
বদলে যাওয়াই প্রকৃতির নিয়ম!

আমি দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হই -এই সমাজকে বদলাতে হলে খুব বড় কিছু হতে হবে আমাকে।
অসহায় মুখগুলোতে হাসি ফোঁটাতে, তাদের পাশে একটু দাঁড়াতে ইচ্ছে জাগে খুব ,
কিন্তু সাধ্যে কুলোয় না কখনো।
তাই কেমন হাল ছেড়ে দেই; তীব্র ঝড়ের কবলে পড়া দিকহারা নাবিকের মতো।

অনিয়ম, অনাচারে ভরে গেছে সমাজ।
এখানে পাশবিকতা থেকে রেহাই পায়না দু'তিন বছরের শিশু,
ঘৃণ্য দলাদলিতে দু'তিনটা লাশ পড়লেও কারো এসে যায় না কিছু!

মাঝে মাঝে ভাবি সমাজের সব অনিয়ম যদি নিঃশেষ করতে পারতাম,
কিছু মানুশের কষ্টগুলো যদি লাঘব করতে পারতাম।
কিন্তু শুধু শুনে যাওয়া আর মিছে সান্ত্বনা দেওয়া ছাড়া তো কিছুই হয় না আমাকে দিয়ে!

কখনো ইচ্ছে হয়, আমি বিষ্পোরিত হই!
মানুশের শুনা কষ্টগুলো আমার সাথে বিদ্রোহ করে।
কিন্তু কাপুরুষের মতো চুপ থাকা ছাড়া আমার আর কিছুই করার নেই।

কখনো কি এই সমাজে শান্তি ফিরে আসবে?
শিশুরা নিরাপদে হাসতে, খেলতে, ছুটোছুটি করতে পারবে?
পারবে কি মায়ের আদরের ছেলে বা মেয়েটা নিরাপদে ঘরে ফিরতে?
পারবে কি সব ছেড়ে আসা মেয়েটা তার শ্বশুরবাড়িকে আপন করে নিতে?
না কি দিন গড়িয়ে মাস না পেরুতেই সে লাশ হয়ে ফিরবে?

আমি জানি, আমাকে দিয়ে কিছু হয়না, হবেও না!
তবুও আমি আশায় বুক বেধে এগিয়ে যাবো পরিবর্তনের দিকে।

একদিন এই সমাজে সুদিন ফিরে আসবে,
মানুশগুলোও ঠিক সভ্য হবে।
সেই প্রতীক্ষায় কেটে যায় আমার দিন-রাত্রি।


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)