উইমেন (সামাজিক,মানসিক,সুবিধা বঞ্চিত নারী)

সূর্যমুখীদের গল্প (নারী ভাবনা- ১০)

সূর্যমুখীদের গল্প (নারী ভাবনা- ১০)

ঘনঘোর পৌষের রাত ফুরোলে

কুয়াশাচ্ছন্ন মানুষ জেগে উঠে,

আঁটকুড়ের মত, তীব্র অপেক্ষায়।

রোদ উঠবে, লালাভ উষ্ণতায়,

পৃথিবী ছেয়ে যাবে,

সূর্যমুখীর মত গলা বাড়িয়ে

শুষে নেবে আলো, তাপ।

 

ওরা ফুটেছিলো, একসময়,

আলোপিয়াসী সূর্যমুখীর দল।

এঘর, ওঘর, ভেতরে, বাইরে

ঘুরে ঘুরে, হেসে, কেঁদে,

আলোও পেয়েছিলো প্রাণভরে।

ফুটে উঠছিলো, সত্যিকারের ফুল হয়ে।

ওরা নরোম, সুন্দর, ঝলমলে রঙীন,

তাই ওদের দিয়ে ঘর সাজতো,

আর ওদের হাতে সাজতো সভ্যতা।

 

সেসব দেড় হাজার বছর আগের কাহিনী।

দিন বদলের পালায়, সব যখন বদলায়,

ওদের দামও বদলে গেলো।

 

আজ কেউ ওদের পণ্য বানায়,

গলায়, কোমর আর জঙ্ঘায় ভাঁজ,

তাতে আদিম সুখ খোঁজ করে।

আর কেউ, পদানত করে, শত লাঞ্ছনায়ও

ঘরের কোণের শালগ্রাম শিলাটির মত,

অধীনস্থ ভেবে, তৃপ্তির হাসি হাসে।

 

না না, এরা কেউ ভ্রষ্টাচারী নয়, হয়ত।

এদের আশ্রয় আছে, প্রশ্রয় মজুদ।

কখনও সমাজ, কখনও রাস্ট্র, কখনও ধর্ম,

এদের সব কাজকে 'ঠিক' বলে।

হুঁ দেয়, ঠিক টিকটিকির মত।

নিজেদের অন্যায় মুখ ঢাকতে

ওরা টুপি পরে কখনও, কখনও ক্রস,

কখনও টিকি, বা জটা।

 

সময় এসেছে, এই সূর্যমুখীরা ফুটবে,

তোমাদের সূর্যের অব্যবহৃত আলোটুকু শুষে নিয়ে।

সভ্যতা, তোমার মসজিদগুলোর দরজা খোলো,

সংস্কৃতি, নিজের পাতায় ভুল শোধরাও।

স্বয়ং সৃষ্টিকর্তা যাদের প্রবেশাধিকার দিয়েছেন।

এই মসজিদে, তাদের দিকে ভ্রুকুটি করার

একবিন্দু ইখতিয়ার নেই তোমার।

 

আর না হয়, রাস্তায় বিলবোর্ডে

বিপন্নবসনাকে দেখতে দেখতে আপশোশ ছুঁড়ে দিও।

মনে রেখো, ফেলে রাখা তৈজসে জং ধরলে

সে দায় অক্সিজেনের নয়,

গেরস্থেরই।

 

নারী ভাবনা ১-৫ঃ https://bit.ly/2QCWGNN

নারী ভাবনা-৬ঃ https://bit.ly/2rrXoPu

নারী ভাবনা-৭ঃ https://bit.ly/2Em90Mq

নারী ভাবনা-৮ঃ https://bit.ly/2BYnEXM

নারী ভাবনা-৯ঃ https://bit.ly/2PpPQXh


আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
সম্পর্কিত ব্লগ