রিক্সায় করে যাচ্ছিলাম। মসজিদের সিঁড়িতে চোখ যেতে একজনকে দেখলাম নিশ্চিন্তে ঘুমাচ্ছে। কোন রকম নড়াচড়া করলে একদম রাস্তায় গিয়ে পড়বে! মাঝে মাঝে খুব অবাক লাগে এই মানুষগুলো খোলা আকাশের নিচে কিভাবে এতো নিশ্চিতে ঘুমোতে পারে! আমি খুব বেশী উচ্চাভিলাষী না হলেও ঘুমানোর সময় চোখে আলো পড়লে, পাশে কেউ শব্দ করলে আমার ঘুম আসে না! অথচ ফুটপাতে মানুষগুলো কেমন নিশ্চিন্তে ঘুমায়! হায়রে জীবন। কেন এই বৈষম্য?
আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন :
‘যারা রহম করে তাদের ওপরই রহমানের রহমত বর্ষিত হয়। পৃথিবীতে যারা আছে তোমরা তাদের প্রতি রহম কর, তবে আসমানে যিনি আছেন তিনিও তোমাদের প্রতি রহমত নাযিল করবেন।’ [ফাওয়ায়েদে ইবনে জুমাআ : ১, মুসনাদে ইবনে আবি শায়বা : ২৪৭৬৫, মুসনাদে আহমদ : ৬৩১৬, তিরমিযী : ১৮৪৪]
আমরা কতটুকু রহম করছি অসহায় মানুষগুলোর প্রতি?
আজ বেশ কিছুক্ষণ বসে থেকে আর ব্যাংকে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার ফলাফল আমার পুরো শরীর প্রচন্ড ব্যথা হয়ে আছে! শোয়া থেকে উঠতে ইচ্ছে করছে না! কিন্তু ঐ হাড় ঝিরঝিরে শ্রমিকগুলো? যারা একমুঠো খাবারের জন্য মাথার ঘাম পায়ে ফেলে সারাদিন খেঁটে যায়, অথচ দিন শেষে তাদের প্রাপ্য পাওনাটুকুও ঠিকমত পায়না, আবার কখনো বাকী থেকে যায়! ওরা কিভাবে দিন পার করে? পরিশ্রমে ওরাও কি কষ্ট পায়?!
রাসুল (সা.) বলেছেন:
'শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।’ (ইবনে মাজাহ।)।
রাসুল (সা.) বলেছেন:
'কেয়ামতের দিন তিন শ্রেণির মানুষের বিরুদ্ধে আমি বাদী হয়ে আল্লাহর আদালতে মামলা করব। তাদের মধ্যে একশ্রেণি হলো, যারা শ্রমিককে খাটিয়ে তার পূর্ণ মজুরি দেয় না। (বুখারি)।
দুনিয়ার আদালতের মামলা কোন বিষয়ই না! টাকা আর ক্ষমতা থাকলে খু...ের মামলাও পার পাওয়া যায়! কিন্তু আল্লাহর আদালতের মামলায় পার পাবেন কীভাবে? তাও আবার বাদী হবেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব বিশ্বনবি হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই ওয়াসাল্লাম!
আমরা আল্লাহর রহম থেকে বঞ্চিত হতে চাই না। আল্লাহর আদালত থেকেও রক্ষা পেতে চাই। আল্লাহ কবুল করুণ আমাদের সকলকে।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)