-একজন আমাকে প্লেটনিক লাভ করে। আমি কি করি?
-মানে কি?
-ঐ যে আপনার গল্পের মতন। (https://goo.gl/bfVimH)
-এই দাঁড়ান, কি মারাত্নক কথা বলে আবার চলে যাচ্ছে। কে ?
-বলব না। সব কিছু বলতে নেই। গেলাম...
-আজব। লজ্জা পেলেন? তার মানে আপনার দিকটা প্লেটোনিক না। আর কত লোকই ত আপনাকে প্লেটোনিক লাভ করে, একজন যদি সাহস করে বলেই থাকে, তাইলে মনে হয় বিষয় আরও গভীরে। তবে এইসব অহেতুক বিশ্লেষণ শুধুই আমার চিন্তাপ্রসূত, জীবিত বা মৃত কারুর সাথে এসবের কোন সম্পর্ক নাই।
-আমাকে সরাসরি বলে নাই। আচ্ছা প্লেটনিকের গভীরতা নেই?
-কঠিন প্রশ্ন। মানব সভ্যতা সেই গভীরতা অনুমোদন করে না। তাতে প্রজন্ম তৈরী ব্যহত হবে।
-ব্যহত হোক।
-আগে সেটা নিশ্চিত করেন। এরপর যত বেশী প্লেটোনিক লভ। আপনি এখন নিজেও জানেন না আপনি কি। আগে জানা উচিত। সবটুকু।
-আমি জানি তো আমি কি। যদি সবটাই জানি তবে কি হবে?
-আপনি একটা অংশ জানেন। মনে করেন, সুবহে সাদিকের আগের সূর্যটাকে চিনেন। ওর সকাল চেনেন না, দুপুর না, রাত না, বিকেল না। যদি জানেন, জানতে পারেন, তাহলে আপনি জানবেন আপনি কেন এসেছেন। নইলে বুঝবেনই না।
-হুম।
-আগে ত নিজেকে জানা।
-নিজেকে জানার উপায় কি?
-Explore into each and every resource you are given within yourself.
-আচ্ছা। এরপর?
-You are a part of your creator. He has blown life into you. Explore yourself, you'll get him. Do you need example?
-হুম।
-You've got two eyes, you see his creation, you match them, and then you imagine with the help of your brain, to make new combinations. And then you discover beauty. Don't u? If you say alhamdulillah after all these, it carries a weight. Rather saying alhamdulillah having your eyes closed. Agree?
-শিওর। কিন্তু তাতে প্লেটোনিকে কি সমস্যা? ফ্রয়েড সবখানে প্রবেশ না করল...
-বললে তো কিছুটা লিমিটের কাছে চলে যাচ্ছি। আপনি না আবার ভড়কে যান।
-না না। আমি ভড়কাই না।
-সোজা বাংলায়, আপনি ভালোবাসা জানেন, তাই না?
-হুম।
-একটা নির্দিষ্ট বা কিছু নির্দিষ্ট মানুষকে দেখলে আপনার কিছু গ্রন্থি বাড়তি এড্রিনালিন নিঃসরণ করে।
-হুম।
-আপনি এই উত্তেজনাটুকু ভালোবাসেন। কথা ওইটাই, আপনি নিজের সে ফীলিংকেই আসলে জানছেন, ভালোবাসছেন, উপভোগ করছেন।
-ওকে।
-হ্যা, সে মানুষটা আপনাকে সেটা জানাচ্ছে। এজন্য আপনি এই ফীলিং এর সাথে আপাতত সেই মানুষটাকে গেঁথে নিচ্ছেন।
-পরে?
-কিন্তু টু বি স্পেসিফিক, এটা যদি একটা মেয়ে হয়, মানে বিপরীত লিঙ্গের কেউ তাহলে শুধু ওই যে এড্রিনালিন আপনার এই ফীলিংসকে পূর্ণতা দেবে না। আপনার সেই অনুভূতিটা স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। আপনাকে তাকে জানতে হয়...
-অসম্পুর্ন থাকলে কি সমস্যা?
-আপনি সে চেষ্টা করেন। আপনি তাকে দেখতে ইচ্ছা করেন। তার চোখে তাকানোর তীব্র আকাংক্ষা বোধ করেন। ঠিক? এইসব তার জন্য না, আপনার নিজের অনুভূতির পূর্ণতার জন্য করেন।
-ওকে।
-আপনি ক্রিয়েটিভ মানুষ, আপনার ক্রিয়েটিভিটির পূর্ণতা কেন দরকার, আমাকে কেন জিগেস করেন? নিজেকে জিগেস করেন।
-হুম।
-আপনাকে জানতে হবে, সেই তৃপ্তিটা আসলে কি? কি জন্য মানুষ পছন্দের মানুষটার একটা চুল ডাইরিতে রেখে দেয়। না জানা পর্যন্ত আপনি একটা বাচ্চার মত, আপনি লজেন্সের মোড়কটাকে লজেন্স ভেবে ধরে আছেন। একটা ব্যপার জানেন? একটা নির্দিষ্ট মানুষকে নিয়ে আপনি অনেক ফ্যন্টাসিতে ভুগতে পারেন। কিন্তু তার থেকে আপনার পাওনা তৃপ্তিটা পেয়ে যেতে অভ্যস্ত হয়ে গেলে সেই ফ্যন্টাসিটা 'স্থির' হয়ে যায়। আপনি তখন নিজেকে নিয়ে কাজ করতে পারবেন। কারণ আপনি নিজকে অন্তত জানেন। জানেন, আপনি কেমন। জানেন, আপনি কি চান। সব ধর্মেই বিয়েকে এতো জরুরি করে দেয়া হয়েছে এজন্য। কোন মানুষকে অবিবাহিত অবস্থায় আল্লাহ নবুওয়্যাত দেন নাই।
যা হোক, আপনাকে বিরক্ত করলাম, না?
-না না। ভালো লাগলো আপনার দৃষ্টিভঙ্গি জেনে।
-'দৃষ্টিভঙ্গি'!
-এত মিষ্টি করে সাজিয়ে বললেন।
-মিষ্টি লাগলো জেনে ভালো লাগছে।
-ধুর এতো ধানাই পানাই না করি, মেয়েটা কে?
-চিনিনা।
-তো?
-অন্য একজন বলেছে।
-আচ্ছা।
-কেন বললো? প্লেটোনিক হইলে ত আদান প্রদানের ব্যপার নাই, জানাইলো কেন? যাক, আমার মনে হয়, যতদূর অভিজ্ঞতা আছে, আমি জানি, প্লেটোর হাত কত লম্বা, আর ফ্রয়েড কতটা সত্যি। এজন্য মনে মনে আপনার জন্য একটা মানুষের মত মানুষ খুঁজি, যেন আপনিও কোনদিন পেয়ে যান, না খুঁজলেও পেয়ে যান। আপনার এক জীবনের সব না জানার তৃষ্ণা মিটিয়ে দিক। যাই তাহলে...
-আচ্ছা যান। পরে আবার কথা হবে। তবে আপনি প্লেটোকে টেনে ফ্রয়েডের কাছে নিয়ে একটা পূর্ণতার দিকে নিতে চাইছেন। এটা বুঝেছি।
-প্লেটো ফ্রয়েড দুইটাই থিওরি। কেউওই রিয়েলিস্টিক না, আলাদা আলাদা স্বয়ংসম্পূর্ণ না। মানবিকতার কাছে আসেন। আপনাকে যা যা দেয়া হয়েছে সেই সবগুলার হিসাব নেয়া হবে। মানে সেসব ব্যবহার করেছেন কি না, সেসবের মধ্য দিয়ে স্রষ্টাকে অনুভব করেছেন কি না- এটাও এই হিসাবের অংশ নয় কি? বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ , পছন্দের মানুষটার মেধা মননের সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হওয়া, তাকে জানার তীব্র ইচ্ছা হওয়া এইসব 'অসীম, অবাস্তব, অন্যায়' না। আপনার সীমাবদ্ধ জীবনে আপনি এর কতটুকু ধারণ করেছেন, সেটা করতে গিয়ে এসবের স্রষ্টার দেয়া বাধ্যবাধকতা কিভাবে মেনেছেন, কতটুকুকে নিজের মত করে গড়ে নিয়েছেন সেটাই দক্ষতা, । সার্থকতা।
ফুলের ঘ্রাণ থাকে কেন, জানেন? রঙ? আমরা ছিঁড়ে এনে শাহবাগে বেচবো বলে? জীবনেও না। এটা আদিম প্রয়োজন। এইটা পূরণ না করলে ফুল কেন, পুরো প্রজাতির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। আপনার বাবা একটা ফুল হাতে আপনার মায়ের সামনে যেতে পারবেন, আপনি পারবেন না। সে ফুল জন্মাবেই না। ফ্রয়েড আর প্লেটো এখানে খিচুড়ি। এই সুষম সমন্বয় কোন আধপাগলা দার্শনিকের মাথায় আসে না, আসবেও না।
যাক, ভালো থাকেন। আমার জন্যও দুয়া করবেন।
-আল্লাহ হাফিয।
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)