-আম্মা ক্ষিদা লাগছে,খাওন দেউ।
-ভাত আর নুন লইয়া খা
-ক্যা?আর কিছু নাই?
-চাইড় দিন ধইরা বৃষ্টি অইতাসে,আয় রোজগার কিছু নাই ,চোক্ষে দেখস না?
-কালকাও হুদা নুন দিয়া ভাত খাইছি।
(একটু আল্লাদ করে)আইচ্ছা টেকা দেউ একটা ডিম নিয়া আসি।
-টেকা নাই।তর বাপের কাছে যা।
-আব্বা ঘুমায় । দেউনা টেকা । ৭টেকায় ১টা ডিম।দেউনা আম্মা।মইরা যাইতাছি তো
-দেখ আমার কাছে ৫টেকা আছে।আর নাই।
-আইচ্ছা রেনু খালারতে খুজি,তুমি পরে দিয়া দিও।
মায়ের থেকে ৫টাকা নিয়েই পাশের ঘরে দৌড় দিলো মিনু।
-খালা.. ও রেনু খালা..
-কি হইসে?রাইত বিরাইতে এতো চিল্লাস কেনরে মিনু?
- মায়ে কইছে ২টেকা দিতে।দিয়া দিবো কালকা।
-এতো রাইতে টেকা দিয়া কি করবি?
-ডিম কিনতাম।ক্ষিদা লাগছে, খাউনের কিছু নাই ঘরে
-আইচ্ছা তোর মায়েরে কইছ টেকা দেউন লাগবো না।খালি একটু ডিম দিস ভাইজ্জা
-আইচ্ছা দিমুনে।
টাকা যোগাড় করেই মিনু খুশিতে আত্মহারা। সেন্ডেলটা পরেই দোকানে দৌড়। বাইরে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি পরছে তার মধ্যেই দোকানে গেলো মিনু
-কাকা, ডিম দেন একটা
-টেকা আনসোস?আমি কিন্তু বাকি দিতাসিনা আজকা।এমনেই বৃষ্টিতে ব্যবসা ভালো যাইতাসেনা।
-টেকা আনসি।
এই বলেই মিনু ৭টাকা বের করে দিল।
-কত দিলিরে বুড়ি? ৮ টেকা দে।
-ডিম তো ৭টেকা ছিল কাকা!
-বৃষ্টিতে দাম বাড়ছে
-১টেকা কালকা দেই?আর নাই
-আইচ্ছা নে। ১ টেকার কিন্তু মাফ নাই। দিয়া যাবি।
ডিম টা হাতে পেয়েই দ্রুত বাড়ির দিকে ছুটলো মিনু।খুশিতে যেন দিশে হারিয়ে ফেলেছে সে।তাই কই পা ফেলছে এই দিকে তার খেয়ালও নেই।
হটাত কাদায় স্লিপ কেটে পরে গেলো মিনু।আর ডিমটাও ভেংগে গেলো ।চোখ ছলছল করে উঠলো মিনুর তবুও কাদলো না।একটিবার আকাশের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেললো। মিনুর চোখে এখন বোবা কান্না আর মনে একটাই প্রশ্ন 'স্রষ্টাও কি শুধু বড়লোকদেরই,গরীবের কি আপন কেউ নেই?'
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)