মেইক ইউরসেল্ফ (রুপচর্চা,পারসোনালিটি,ক্যারিয়ার,স্বাস্থ্য)

স্বাস্থ্য সম্মত ইফতার

স্বাস্থ্য সম্মত ইফতার
5 রমজান মাসের রোজা যেহেতু ফরজ ইবাদত, মুসলিম দেশগুলোতে রমজান মাস এলে সবাই রোজা রাখার প্রস্তুতি নেয় এবং নিজেদের দৈনন্দিন কার্যাবলীর সময়সূচির মধ্যেও পরিবর্তন নিয়ে আসে। রমজান এলে বিকেল বেলা থেকেই ইফতারের জন্য বিভিন্ন প্রকার খাবার আয়োজনের ব্যস্ততা শুরু হয়। বিশেষ করে বাসাবাড়ীতে নানা রকম সুস্বাদু ও মুখরোচক খাবারের আইটেম তৈরী করার প্রবণতা দেখা যায়। মানুষের এই প্রবণতাকে কেন্দ্র করে, হরেক রকম ইফতারীর পশড়া সাজিয়ে দোকানীরা রাস্তার ধারে, ফুটপাতে, অলিতে-গলিতে বসে যায়। এ ইফতার সামগ্রীর মধ্যে যেগুলো থাকবেই তার মধ্যে রয়েছে খোলা খেজুর, পেয়াজু, আলুর চপ, বেগুনী, ছোলা, মুড়ি, ডাল বড়া, সবজি বড়া, হালিম, বিভিন্ন ধরণের কাবাব, জিলাপী ইত্যাদি। এছাড়াও আছে বিভিন্ন ফল ও ফলের রস, আখের গুড়ের শরবত, বিভিন্ন রঙ মিশ্রিত বাহারী শরবত। আর হালের চিকেন ফ্রাই, বারবিকিউ এর পাশাপাশি চিরায়ত মুখরোচক খাবার-বিরিয়ানী, তেহারী ও ভূনা খিচুরী তো আছেই। প্রথম প্রশ্ন হলো, এ সমস্ত মুখরোচক খাবার স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে তৈরী করা হয়েছে কিনা? আমাদের দেশের অধিকাংশ জায়গায় এসব মুখরোচক ভাজা খাবার তৈরীতে ব্যবহূত হয় ভেজাল তৈল, বেশন ও কৃত্রিম রঙ। এছাড়াও একই তৈল বারবার ব্যবহারের ফলে তৈলের মধ্যে যে বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ তৈরী হয় তা জেনে না জেনে সবাই একই তৈল ব্যবহারের কাজটি করে যাচ্ছে। একই তৈল বারবার ব্যবহারে পলি নিউক্লিয়ার হাইড্রোকার্বন তৈরী হয় যার মধ্যে আছে বেনজা পাইরিন নামক ক্যান্সার সৃষ্টিকারী পদার্থ। তদুপরি, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে ইফতার তৈরীর ফলে ইফতার বিভিন্ন জীবানু দিয়ে দূষিত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশী থাকে। যা পেটের পীঁড়ার কারণ হতে পারে। ইফতারের সামগ্রীগুলো স্বাস্থ্যসম্মত উপায়ে না ভেজে বেশী তেলে ভাজা হয়, যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বর্তমানে ফল সংরক্ষণে ফরমালিনের ব্যবহার যে পরিমাণ বেড়েছে তাতে ভেজাল মুক্ত টাটকা ফল পাওয়া দুষ্কর। ফল কিনে ঘন্টাখানিক ভিনেগারযুক্ত পানিতে ভিজিয়ে রাখলে কিছুটা ফরমালিন মুক্ত করা যায়। কিন্তু রাস্তা ঘাটে যে রকমারী শরবত বিক্রয় হয় সেগুলো আদৌ বিশুদ্ধ পানি দিয়ে তৈরী হয় কিনা তা প্রশ্নসাপেক্ষ। একজন রোজাদার ইফতারীতে কি খাবেন তা নির্ভর করবে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা ও বয়সের উপর। এখানে উল্লেখ্য যে, পারতপক্ষে দোকানের তৈরী ইফতারী ও সেহরী না খাওয়াই ভালো। সুস্থ ও স্বাস্থ্যবান রোজাদারের জন্য ইফতারীতে খেজুর বা খুরমা, ঘরের তৈরী বিশুদ্ধ শরবত, কচি শশা, ফরমালিন বা ক্যালসিয়াম কার্বাইডমুক্ত সতেজ মৌসুমী ফল, ভেজানো চিড়া থাকা ভালো। এছাড়াও বাসায় তৈরী পরিমাণ মত বিশুদ্ধ তেলে ভাজা পেঁয়াজু, আলুর চপ, বেগুনী, জিলেপী এবং বুট ও মুড়ি রাখা যেতে পারে। অনেকে খাবারের আইটেমে ভিন্নতা আনতে নুডুলস, সেমাই, ভূনা তেহারী, হালিম ইত্যাদি রাখেন। এ খাবারগুলো দোকান থেকে কেনার চেয়ে বাসায় তৈরী করে নেয়া উচিত্। মূলত, ইফতারী হতে হবে এমন কতগুলো খাবারের মিশ্রণ, যেন তা খাদ্যের উপাদানগুলোকে পর্যাপ্ত পরিমাণে সরবরাহ করতে পারে। সারাদিন না খেয়ে থাকায় দিন শেষে রক্তে গ্লুকোজ কমে যায়। আর গ্লুকোজ হল মস্তিষ্কের খাদ্য। এ কারণে ইফতারে এমন আইটেম থাকা উচিত্ যা দ্রুত রক্তে গ্লুকোজ সরবরাহ করতে পারে। ফল (যেমন: খেজুর), ফলের রসের জুস এবং শরবত এ প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে পারে এবং পাশাপাশি ভিটামিন ও খনিজ উপাদানও সরবরাহ করে। এগুলোর সাথে এমন কিছু উপাদান থাকা দরকার যা হজম হতে সময় নেয়। চিড়া, মুড়ি, আলুর চপ, ভাত, রুটি, তেহারী ইত্যাদি খাবার শরীরে হজম হতে সময় নেয়। এশা ও তারাবীহ্-এর পর নিয়মিত অভ্যাস অনুযায়ী ভাত, মাছ, মুরগী বা মাংস, ডাল ও সবজি খাবেন। তথ্যসূত্র: ইত্তেফাক

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)