মেইক ইউরসেল্ফ (রুপচর্চা,পারসোনালিটি,ক্যারিয়ার,স্বাস্থ্য)

একুশ শতকে তারুণ্যের প্রত্যয় (প্রথম পর্ব)

একুশ শতকে তারুণ্যের প্রত্যয় (প্রথম পর্ব)

ছোটবেলা থেকেই আমরা শুনে এসেছি “আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ”। এ কথাটিকে আরেকটু সংক্ষিপ্ত করে বলতে চাই, আজকের তরুণরাই আগামীকালের প্রতিচ্ছবি। তারুণ্যের প্রত্যয়ই এ পৃথিবীকে একটি সুন্দর রূপরেখা প্রদানে সহযোগিতা করতে পারে। 'তারুণ্য' ও 'প্রত্যয়' এ দুটি শব্দের মাঝেই অদৃশ্য কিছু শক্তি আছে। এ শব্দগুলোর সাথে ন্যায়পরায়ণতা, দৃঢ়সংকল্প বোধ, নৈতিকতাবোধ, বিশ্বাস ইত্যাদি গুণসম্পন্ন একটি শক্তিশালী প্রতিমূর্তি জড়িত। তারুণ্যের প্রত্যয় শব্দটি শুনলে কার কি মনে হয় জানি না। কিন্তু আমার চোখের সামনে একটি স্পষ্ট প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠে। যে ছবিতে কিছু মানুষ আছে, আছে মন ভরে নিশ্বাস নেয়ার মতো বিশুদ্ধ বাতাস এবং একরাশ স্বপ্ন। কিন্তু আমরা তরুণ প্রজন্ম কি বিশুদ্ধ বাতাস তৈরী করতে পারছি? নাকি বাতাসকে কলুষিত করছি? আমরা কেউ কি স্বপ্ন দেখতে জানি? ব্যতিক্রমদের নিয়ে আজ কথা বলবো না। আমাদের নিয়েই আজকে কথা বলি-

 

বলুনতো আমাদের স্বপ্ন কি? আসুন! চোখ বন্ধ করে একটু ভাবি আমরা দশ বছর পর নিজেদের কোথায় দেখতে চাই। বেশী না মাত্র দশ বছর।

কি স্বপ্ন দেখছি আমরা? খুব সুন্দর একটি গাড়ি থেকে নামলাম। সবাই সালাম দিচ্ছে। গটগট করে হেটে নিজের রুমে ঢুকলাম। ধীরে ধীরে সামনের ফাইলগুলোতে মগ্ন হয়ে যাচ্ছি। গুলশান বা বনানীতে নিজের বাড়ি, গাড়ি, একটি সুন্দর পরিবার, নিজের সব চাওয়া-পাওয়া সব কিছু নিয়ে ভবিষ্যৎ জীবন কল্পনা করতে খুব ভালো লাগে। তাই না? আচ্ছা! আপনি ভ্রু কুচকে আছেন কেন? ভাবছেন আপনার ভাবনার সাথে আমার ভাবনা মিলেনি। আপনি আমার মতো এত বিস্তৃত পরিসরে স্বপ্ন দেখেন না। আপনার স্বপ্নতো ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, বিসিএস ক্যাডার, ব্যাঙ্কার বা নির্দিষ্ট কোন পদবী অর্জনেই সীমাবদ্ধ। বাড়ি-গাড়ির স্বপ্ন দেখেন না। স্বপ্ন যাই হোক একটু ভেবে দেখু... আমাদের এই চাওয়াগুলো পেলেই কি জীবনের উদ্দেশ্য পূরণ হয়ে যায়!  কি ভাবছেন? জীবনে চাওয়া পাওয়াগুলো পূরণ করতে চাওয়াতো দোষের কিছু না। আমার এভাবে নেতিবাচক চিন্তা করা উচিত না। সেটাই; একদম ঠিক বলেছেন। আসুন আজকে আমরা একটু ইতিবাচক চিন্তা করার চেষ্টা করি। আমাদের জীবনের এক এবং একমাত্র লক্ষ্য হোক “একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন ও দায়িত্বসম্পন্ন ভালো মানুষ হওয়া”। ভালো মানুষ হওয়ার মূলমন্ত্রও কিন্তু আপনাকে আপনার আজকের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যের বেশ কাছাকাছি পৌঁছে দিবে। সেই সাথে আপনাকে দিবে একরাশ প্রশান্তি।

সৈয়দ আবুল হোসেন তার “তরুণের সাধনা” প্রবন্ধে বলেছেন,

“যে জাতি তার ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে সচেতন নয়, সে জাতি কখনও নূতন সত্য আবিষ্কার করতে কিংবা নূতন সৃষ্টি করতে পারে না।”

আসুন আমরা নিজেকে জানি। নিজের দায়িত্বগুলো জানি।  আমি কে, আমি কি হতে চাই, কেন হতে চাই, আমি যখন থাকবো না তখনও এই পৃথিবী আমার মাধ্যমে কীভাবে উপকৃত হবে সে সম্পর্কে একটু ভেবে দেখি। নিজের ব্যক্তিত্ব সম্পর্কে ভাবি। নিজেকে জানার পর এবার আসুন আমরা প্রতিজ্ঞা করি, আমাদের ছোট্ট জীবনে নিজের দায়িত্ব পালনে সর্বদা সচেতন থাকবো। আজ থেকে কখনোই সত্যের সাথে আপোষ করবো না। এবং জেনে রাখু... এই প্রতিজ্ঞাই আপনাকে পৌঁছে দিবে সফলতার চূড়ান্ত সীমায়। কীভাবে এটি সম্ভব অবাক হচ্ছেন তো? তাহলে একটু অপেক্ষা করুন পরবর্তী দুটি পর্বে খুব সংক্ষিপ্তভাবে আমরা আমাদের দায়িত্বের পরিসরগুলোতে চোখ বুলিয়ে নিব।

(লেখাটি প্রথম প্রকাশ পেয়েছে দি পাথফাইন্ডার পাবলিকেশন্স কর্তৃক প্রকাশিত বাণী নামক ত্রৈমাসিক পত্রিকায়)

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন