
গত ১৪ মার্চ, ২০১৫, রোজ শনিবার, দুপুর ২.১৫ মিনিটে অনুষ্ঠিত হোল Young Economists Association (YEA) এর public lecture 5 । এবারের বিষয় ছিল ‘Towards One Bangladesh’ । আলোচক হিসেবে ছিলেন Stamford University Bangladesh এর অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক শিব্বির আহমাদ । অনুষ্ঠানে Stamford University Bangladesh এর অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক রোকসানা রহমান , আযহারুল ইসলাম, রাশেদুল হাসান চৌধুরী । এবারের পাবলিক লেকচার ছিল Young Economists Association (YEA) এর #OneBangladeshCampaign এর একটি অংশ ।
একটা দেশে বিভিন্ন ধরণের বৈচিত্র্য থাকে, যেমন- সাম্প্রদায়িক বৈচিত্র্য, ভাষাগত বৈচিত্র্য, সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য, ভুমি-গঠনগত বৈচিত্র্য , চেহারার রঙে বৈচিত্র্য , খাবার-দাবারে , রাজনৈতিক বৈচিত্র্য, জীবনযাপন পদ্ধতিতে বৈচিত্র্য, বিশ্বাসের দিক দিয়ে বৈচিত্র্য ইত্যদি ।
ছোট এই দেশে মানুষে মানুষে, চিন্তা-চেতনায়, কাজে-কর্মে অনেক অনেক পার্থক্য । তাহলে এদের মধ্যে কে টিকে থাকবে ? আসলে টিকে থাকতে হবে সবাইকে ।
একটা মানুষের দেশ, ধর্ম, পেশা ইত্যদি অনুযায়ী বিভিন্ন রকমের পরিচয় থাকে । সব পরিচয় নিয়ে তাকে এই সমাজে বসবাস করতে হবে ।
#OneBangladeshCampaign কি?
--- #OneBangladeshCampaign মুল প্রতিপাদ্য হবে-সাম্য, শান্তি আর ন্যায়ভিত্তিক সমৃদ্ধ সমাজ গঠনের লক্ষ্যে সকল মত, পথ, বর্ণ, গোত্র, ভাষার মানুষের সহনশীল সহাবস্থানের প্রচারাভিযান। একে অপরের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ানো নয় বরং বৈচিত্রের সৌন্দর্য্যকে কাজে লাগিয়ে আগামীর সুন্দর বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে তরুনদের উদ্বুদ্ধ করা। এদেশ সবার, এখানে সবাই থাকবে। ঘৃণা নয়, বিদ্বেষ নয়, নির্মূল নয়, নয় কোন চরমপন্থা। এই দেশের সকল শ্রেণীর মানুষের সহাবস্থান এবং সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে গড়ে উঠবে বাংলাদেশ। এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
কেন #OneBangladeshCampaign ?
--- আমরা যদি চাই সমাজের এক গ্রুপ আরেক গ্রুপকে শোষণ করবে, তবে শক্তিশালী গ্রুপই সমাজে টিকে থাকবে । কিন্তু, এই বৈচিত্র্য তো মানুশ নিজে নিজে তৈরি করেনি । হয়ত ধর্মীয় বৈচিত্র্য সে নিজে গ্রহন করতে পারে কিন্তু বাকিসব প্রাকৃতিক । প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে কেউ টিকে থাকতে পারে না , কেউ টিকে থাকেনি । একটা দেশের বৈচিত্র্য হচ্ছে সে দেশের সৌন্দর্য । বৈচিত্র্য কখনো অভিশাপ নয় । বাংলাদেশের এই বৈচিত্র্যকে রক্ষা করার অভিপ্রায় নিয়েই #OneBngladeshCampaign
বৈচিত্র্য গুলোর মধ্যে কখন সমস্যা হয় ?
--- শ্রেষ্ঠত্বের অহংকার এর কারণেই সমস্যা হয় । যখন কোন এক শ্রেণীর মানুষ নিজেদের শ্রেষ্ঠ মনে করে, তখনই উগ্রবাদ বা চরমপন্থার জন্ম হয় এবং সমাজে সমস্যার উদ্ভব হয় ।
চরমপন্থি কারা?
--- একটা মানুষ যখন নিজের বিশ্বাস বা বৈশিষ্ট্যকে শ্রেষ্ঠ মনে করে এবং নিজের বিশ্বাস বা বৈশিষ্ট্যকে অন্যের উপর চাপিয়ে দেয় , তারাই চরম্পন্থি । অনেক সময় অনেকে বিভিন্ন রকমের বঞ্চনার শিকার হয়েও চরমপন্থি হয়ে যায় । চরমপন্থা জাতি, ধর্ম, গোত্র, বর্ণ ইত্যাদি বিভিন্ন রকমে হতে পারে ।
--- চরমপন্থি দলগুলোর মধ্যে বেশ কয়েকটি পর্যায় থাকে – প্রথম পর্যায়ে ওরা গালাগালি করে , দ্বিতীয় পর্যায়ে ওরা হুমকি দেয়া শুরু করে, তৃতীয় পর্যায়ে ওরা আক্রমণ করে ।
এই বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়ে কি দেশের উন্নয়ন সম্ভব ?
--- হ্যা সম্ভব । এক্ষেত্রে একটি সাধারণ বৈশিষ্ট্য লাগবে, যা সবার মধ্যে বিদ্যমান । পুরো বাংলাদেশকে এক করতে হলে যে বৈশিষ্ট্য লাগবে , তা হচ্ছে- ‘আমি বাংলাদেশি’ এই বোধ ! আমাদের সমসাময়িক সময়ে স্বাধীন হওয়া মালেয়শিয়া কোথায় আর আমরা কোথায়? তুলনামূলক সমজাতিক জনগোষ্ঠী নিয়েও আমরা উন্নয়নশীল দেশ আর মালেয়শিয়া বিচিত্র সংস্কৃতির দেশ হয়ে ও উন্নত। এর কারন মালেয়শিয়া তার বৈচিত্র্যের সৌন্দর্য্যকে কাজে লাগিয়ে ঐক্যবদ্ধ মালেয়শিয়া গড়ে তুলেছে আর আমরা আমাদের মধ্যে নতুন নতুন বিভাজন রেখা তৈরি করেছি এবং প্রতিনিয়ত করে যাচ্ছি।
রাষ্ট্র যদি উগ্রবাদকে প্রশ্রয় দেয় তবে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে এগিয়ে যায় । আমরা কেউ কাউকে নিঃশেষ করতে পারবো না । বাংলাদেশ থাকলে বৈচিত্র্য থাকবে । সবাইকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে । উগ্রবাদকে প্রশ্রয় দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয় । আমাদের পরিচয় হচ্ছে-
“we are one nation,
we are Bangladeshi”
আপনার মতামত দিন:
(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)