অনুবাদ

ক্ষুদে বীরপুরুষ মুহাম্মদ আলী!

ক্ষুদে বীরপুরুষ মুহাম্মদ আলী!
Ali1-650x430 রবীঠাকুরের সেই 'বীরপুরুষ' কবিতাটি আমরা সবাই কম বেশি জানি। এক ছোট্ট ছেলে কি করে তার মা কে সাহস দিয়েছিলো,লড়েছিলো অস্ত্রধারী ডাকাতদের সাথে! কিংবা হোম এলোন সিরিজের এর সেই সাহসী ছোট্ট ছেলেদের কথা,যারা খুব অল্প বয়সেই বুদ্ধিমত্তা এবং সাহসের সাথে রক্ষা করেছিলো নিজের পরিবারকে। আজ আমরা পরিচিত হবো,তেমনি এক ক্ষুদে বীরপুরুষের সাথে,যে কি না ভালোবাসাপূর্ণ সাহসের সাথে নিজের মা কে বাঁচিয়েছে ৭জন অস্ত্রধারী ডাকাতদের হাত থেকে। তার নাম ''মুহাম্মদ আলী''। ৬বছর বয়সী,প্রায় ৪ফুট উচ্চতা সম্পন্ন ছেলেটি পরিবারের সাথে থাকে ইউকের ওয়েষ্ট মিডল্যান্ডস অঞ্চলে। ঘটনার দিন অর্থাৎ অক্টোবরের ২তারিখ রাত সাড়ে আটটার দিকে নিজের বাসায় মুহাম্মদ আলী তার মা রিফাত আকরাম এবং ছোট ভাই আদান শাহইয়ানের সাথে প্রতিদিনের মতো তাদের বাবার ফেরার অপেক্ষায় ছিলো। ঠিক তখনই বাসায় ডাকাতির উদ্দ্যেশ্যে ঢুকে একদল সশস্ত্র ডাকাত। এবং তারা ঢুকেই রিফাত আকরাম কে বলে, - যেখানে যা আছে দ্রুত তাদের হাতে তুলে দেয়ার জন্য! ছোট দু'টি বাচ্চা কে নিয়ে রিফাত প্রচন্ড ভয় পেয়ে যান!আতংকে কি করবেন বুঝতে পারছিলেন না! ডাকাতরা পুরো বাড়ি তল্লাশী করে যা কিছু পায় নিয়ে যাবার সময় রিফাতের কাছে আসে,এবং অস্ত্র তাক করে,রিফাত কে তার পরনের অর্নামেন্টস খুলে দেয়ার জন্য বলে! যেই না ডাকাত রিফাত কে অস্ত্র তাক করে,ওমনি মুহাম্মদ আলী চিৎকার করে বলে উঠে, -খবরদার,আমার মা কে কিচ্ছু করবে না!ডন্ট টাচ হার! এবং মুহাম্মদ আলী তার মাকে জড়িয়ে ধরে বলে, -ভয় পেও না মা,কিচ্ছু হবে না,আমি আছি তোমার সাথে! ছোট্ট বাচ্চাটির মুখে এমন কথা শুনে মায়ের মন আরো ঘাবড়ে যায়,না জানি ডাকাতরা মুহাম্মদ কে কিছু করে বসে! ডাকাতরা রিফাত কে কানের রিং এবং গলার চেইন খুলে দিতে বলে,তখন মুহাম্মদ আবারো চিৎকার করে বলে, - খবরদার,আমার মায়ের দিকে ছুরি উঠাবে না! তার দিকে এগিয়ে আসবে না! এবং তার মায়ের ঘাবড়ে যাওয়া মুখ দেখে বলে, - মা প্লিজ তুমি ভয় পেয়ো না,এরা স্পাইডার ম্যান না! মজার ব্যাপার হলো,ডাকাতদের কে দেখে মুহাম্মদ প্রথমে ভেবেছিলো,তাদের বাড়িতে বুঝি স্পাইডার ম্যান এসেছে!! কিন্তু যখন তারা ঘর লুট করলো,এবং মায়ের দিকে অস্ত্র তাক করলো তখন মুহাম্মদের ভুল ভাঙ্গল! ইতিমধ্যে ১বছরের আদান কান্না শুরু করলো,এবং মুহাম্মদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশিদের সহযোগীতায় পুলিশ দ্রুত বাড়ি ঘিরে ফেলে,সবশেষে ডাকাতদের কে এরেষ্ট করা হয়। ভয়াবহ সেই মুহুর্তে সাহসের সঙ্গে মুহাম্মদ যেভাবে মা কে সাহস দিয়ে সহযোগীতা করেছে,এবং ডাকাতদের সাথে কথা বলেছে এটা সত্যিই অভূতপূর্ণ ছিলো। ছোট্ট সেই ছেলেটির মাথায় ঐ সময়েই এই চিন্তা কাজ করেছিলো যে, যে করেই হোক মা কে বাঁচাতে হবে,মা এর যেন কিছু না হয়! কি চমৎকার সেই অনুভূতি! মুহাম্মদ আলীর এই কাজে অভিভূত হয়েছে তার প্রতিবেশি সহ সবাই। আর তাই মুহাম্মদ কে দেয়া হয়েছে, এল্যান হেননিং ইয়ুথ এওয়ার্ড। রিফাত আকরাম জানিয়েছেন, সেই ঘটনার পর মুহাম্মদ কে নিয়ে তারা খুব দুঃশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন,সে রাতভর ঘুমাতে পারতো না,কিন্তু ধীরে ধীরে,সবার সহযোগীতায় মুহাম্মদ এখন স্বাভাবিক হয়েছে। ক্ষুদে বীরপুরুষ মুহাম্মদ আলীর জন্য রইলো অনেক অনেক শুভকামনা। সূত্র- ইয়্যাং মুসলিম ওর্গানাইজেশন অফ ইউকে।      

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)