অনির্ধারিত

শিশুটির কান্না থামলো তখন, যখন ...

শিশুটির কান্না থামলো তখন, যখন ...
তেহরানে একটা অনুষ্ঠান শেষে কাজভিন শহরের পথে রওনা দেবার উদ্দেশ্যে বাসের জন্য ময়দানে আজাদীতে অপেক্ষা। কিছুক্ষন অপেক্ষা শেষে বাস আসলে বাসের ভেতরে গিয়ে বসলাম। কিছু সময় যেতে না যেতেই বাসের সীটগুলো যাত্রীদের দ্বারা পুর্ন হতে শুরু করলো। কোন এক মুহুর্তে আমার সামনের সীটে একজন মহিলা তার শিশু সন্তানকে নিয়ে বসলেন। বাস পুর্ন হলেই ড্রাইভার কাজভিনের উদ্দেশ্যে রওনা দিবেন। হেলপার এসে যাত্রীদের কাছ থেকে ভাড়া তুলতে ব্যাস্ত। হঠাৎ-ই সামনের সীটের শিশুটি কান্না শুরু করে দিল। বুঝলাম না, কি জন্য শিশুটি কাঁদছে !! চারিদিক তাকিয়ে দেখি তার পাশে তার মায়ের সীটটি খালি পড়ে আছে। সময় যত গড়াচ্ছে শিশুটির কান্নার মাত্রা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। কান্নার সাথে সাথে শিশুটি বাসের জানালা দিয়ে বাইরের দিকে বারবার তাকাচ্ছে। বুঝতে সময় লাগলোনা শিশুটির মা তাকে রেখে বাইরে কোন কিছু কিনতে গেছে। এক সময় শিশুটির কান্নায় আশে পাশের সীটের যাত্রীদেরও শিশুটির প্রতি নজর পড়লো। কিছু মহিলা শিশুটিকে সান্তনা দিতে এগিয়ে আসলো (গেরিয়ে না কুন ) কেদোনা !! তোমার মা কিছুক্ষনের মাঝেই ফিরে আসবেন। (নেগারন না বস) চিন্তা করোনা !! কিন্তু কে শুনে কার সান্তনা, সে তো অন্য কেউ না তার মা !! না শিশুটির কান্না কিছুতেই থামছেনা। শিশুটি এবার সীট থেকে উঠে নিচে যাবার জন্য অস্থির হয়ে সামনের দরজার দিকে যেতে লাগলো। হেলপার শিশুটিকে কিছুতেই নিচে যেতে দেয়না। তা দেখে আমি কিছুটা স্বস্তি অনুভব করলাম। কারণ শিশুটি যদি বাইরে অন্য পথে গিয়ে হারিয়ে যায় তবে চোখের সামনেই একটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে যেতে পারে। অতঃপর তার মা কিছু খাবার কিনে বাসের গেটে ফিরতেই কান্নার ইতি ঘটলো, এবং শিশুটির মুখে হাসির সঞ্চার হলো। এই হল মা সন্তানের আত্মার সম্পর্ক !! এক মুহুর্তের জন্য চোখের সামনে না থাকায় কান্নার রোল বইয়ে দিয়েছিল শিশুটি কিন্তু যখন তার মা ফিরে আসলো সেই কান্না দীর্ঘায়িত না হয়ে তৎক্ষনাৎ থেমে গিয়ে তা হাসিতে রুপ নিল। আমাদের সামনেই কখনো বা এ রকম ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আমার মনে হয় মা সহ সকল অভিভাবকদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত। হতে পারতো শিশুটি মায়ের খোঁজে বাস থেকে নেমে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনার সম্মুখীন হতে...

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)