অনির্ধারিত

স্মৃতির বালুকা বেলায়

স্মৃতির বালুকা বেলায়
সবেমাত্র হাঁটি-হাঁটি পা-পা করে হাঁটতে শিখেছি, বাড়ীর পথ ধরে আর হেঁটে চলেছি, আর ডাকছি "মিনু-ম্মা...মিনু-ম্মা"। পথের ধারে দাদাও আমার সঙ্গি। গ্রামের লোকজন দাদার কাছে জানতে চায় "নাতি কারে অমন করে ডাকছে?" দাদা বলে "ও এক বন্ধুকে ডাকছে।। আমার বন্ধু দুই অক্ষরের একটি সম্বোধন আমার "নানু"। দুই ভাই পিঠা-পিঠী হওয়ায় নানুর কাছে ছিলাম ছোটবেলায়, নানুর আদর-যত্নে বড় হওয়া; তাঁরই হাত ধরে স্কুলে পথে প্রথম যাত্রা; অনেক দিন যাওয়া-আসা। জীবনের মধুর স্মৃতি গুলোর মধ্যে অন্যতম। এভাবেই জীবন প্রভাতের দিন গুলোর রঙ্গীন পথ চলা। এরই মাঝে এক দুষঃসহ ঘটনায় আমি আর পড়ালেখা করব না এমন গোঁ ধরি। ততদিনে বোন-আমি একসাথে যাওয়া-আসা করি। একদিন স্কুল থেকে ফেরার পথে এক খুস্কু ধরা (অপহরণকারী) পিছুঁ নিয়ে বাড়ীর পথ পর্যন্ত আসে। জুতা হাঁতে নিয়ে প্রাণপণে দৌড়ে রক্ষা পাই আল্লাহর রহমতে। আপু আর আমি কান্নার-রোল তুলে বাড়ী আসি। "স্কুলও আর যাইতাম নায়"-এমন গোঁ ধরলাম যে, স্কুলে যাব না ত যাব না। নানু অনেক বুঝিয়ে-শুনিয়ে আবার স্কুলের পথ ধরালেন। সাথে করে নিয়ে যেতেন আবার নিয়ে আসতেন। দীর্ঘ সময় স্কুলে বসে থাকতেন।। এইত গত জানুয়ারি মাসে আমার অসুস্তায় সারা রাত আমার পাশে বসে ছিলেন, ব্যাথায় আমি কঁকিয়ে (চিৎকার করে) উঠলে আমার সুস্ততার জন্য দুয়া করে চোখের পানি ফেলে দু'আ করেছেন। নিজের জীবনকে তুচ্ছ করে নাতির বড় হবার পথকে সুগম করতে কি প্রাণান্তকর প্রয়াশ। এভাবে আরও কত-শত ঘটনা। আমার মনের কোণায় জমা হচ্ছে আজও। এই ধারা যেন অটুট থাকে। আল্লাহ্‌ যেন আমার নানিকে "হায়াতে-ত্বাইবা" দান করে যেন আমার ছেলে-মেয়েরাও নানুর মমতার পরশ পায়।। :-P  :-P

আপনার মতামত দিন:

(মন্তব্য পাঠকের একান্ত ব্যক্তিগত। এর জন্য কর্তৃপক্ষ দায়ী নন।)
লেখকের অন্যান্য ব্লগ সবগুলো দেখুন