২ মে, রাত ১১ঃ৫৫
যমুনা ব্রীজ প্রচন্ড শব্দে বাজ পড়েছে, ঘুম ভেঙে গেছে। বগির মধ্যে সবাই ঘুম। বাইরে থেকে হু হু ঠান্ডা বাতাস, বাচ্চাদের ঠিকঠাক করে জানালা বন্ধ করতে গেলাম। উনি বাঁধা দিলেন, এখন যমুনা ব্রীজে উঠবো।
কি আশ্চর্য এক সৃষ্টি। এর মডেল নিয়ে কাজ করেছি, এর তলায় ভূমিকম্প দিয়ে নড়াচ্ছি মডেলকে, আজকাল ট্রেন চালাতে চেষ্টা করছি মডেলের ওপর দিয়ে, বুঝতে চাইছি কেন ফাটলো এর বুক। আর এখন, সত্যি সত্যি এর ওপর দিয়ে যাবো।
বাসে, ছোট গাড়িতে করে গেছি আগে দুইবার, ট্রেনে করে এই প্রথম। পেছনের সিট থেকে নক করলো একবার, আপা জানালা বন্ধ করেন। আমার ‘ভাই একটু ব্রীজ দেখি’ শুনে কি চেহারা করেছে দেখছি না, কিন্তু পাগল টাগল ভেবে বসেছে হয়ত।
দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ব্রীজ, যার মধ্যখানটা বক্স, ছয়টা মডিউল আছে, উত্তর প্রান্ত সক্রিয় ভূমিকম্প প্রবণ এলাকায়, এক নিমিষে মাথায় সব খেলে যাচ্ছে। এ তো জ্ঞানের কথা। আর বাস্তবতা আধখানা খোলা জানালায় ব্রীজের চকচকে কালো রাস্তা, নিচে পানি, দেখা যাচ্ছে না, ঝুম বৃষ্টি নেমেছে।
চায়ের কথা বলেছি অনেকক্ষণ আগে। একবার এসে নাকি দেখেছে আমি ঝিমাই, এর মধ্যে চা ও শেষ। এখন এসে কফি দিয়ে গেলো। কী অপূর্ব যোগাযোগ। ট্রেন ঢিইমে তালে আগাচ্ছে, ব্রিজকে যথাসাধ্য কম বিরক্ত করে। আর আমি কলা দিয়ে কফি খাই। দারুণ খেতে।
এই যে ট্রেন ভর্তি এতো মানুষ, কাউকে চিনিনা। অথচ কত কাছে এসে কত লম্বা সময় একই দিকে যাচ্ছি। এই মধ্যরাতে, মানুষের ঘুমন্ত মুখে ঠান্ডা বাতাস মেখে পদচিহ্ন এঁকে যাই, বুঝেছো রঙ?
এই সিরিজ লেখাটা একদম উচিত হয় নাই… ট্রেনে জার্নির লোভ দেখায় দিলেন… অথচ সুযোগ নাই… :(
কফি খেতে খেতে পোস্ট পড়ি… কলা দিয়ে খেয়ে দেখবো নাকি ভাবতেছি…
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ। আপনার সাথে সাথে আমরাও উপভোগ করছি ট্রেন ভ্রমণ…..
পরবর্তী পর্ব পড়ার অপেক্ষায় রইলাম…